Home অর্থনীতি অতিমারির ধাক্কায় আমূল পরিবর্তন

অতিমারির ধাক্কায় আমূল পরিবর্তন

অতিমারির ধাক্কায় আমূল পরিবর্তন
0

জোয়েল ম্যাকক্লিয়ারি ও মার্ক মেডিশ

(আমরা এর আগে পাঠকদের জানিয়েছিলাম, করোনা-পরবর্তী পর্যায় সাম্রাজ্যবাদী দুনিয়ার গতিপ্রকৃতি কোন খাতে বইতে চলেছে, কোন কোন বিষয়কে ঘিরে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির দ্বন্দ্ব আবর্তিত হবে, কোন কোন ক্ষেত্র থেকে তারা এরপর মুনাফা লুটতে চাইবে, তা নিয়ে বিভিন্ন নিবন্ধ আমরা প্রকাশ করব। এই নিবন্ধটি মূলত মার্কিন সরকারকে পরামর্শ দিয়ে লেখা হলেও, বলাই বাহুল্য, সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের প্রযুক্তি তৃতীয় বিশ্বের ওপর প্রয়োগ করেই খরচ তোলে। মুনাফা করে। তৃতীয় বিশ্বের সরকারগুলির মাধ্যমে তারা তৃতীয় বিশ্বের জনগণের ওপর সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থরক্ষার দায় চাপিয়ে দেয়। বর্তমান নিবন্ধটি থেকে বৃহৎ মার্কিন বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলির পরিকল্পনার আঁচ পাওয়া যাবে বলে আমরা মনে করছি। আগামী দিনে ভারতের নিপীড়িত জনগণের স্বাস্থ্যের ওপর নয়া সাম্রাজ্যবাদী হামলা আসতে চলেছে। এই ধরনের নিবন্ধ প্রকাশ করার উদ্দেশ্যই হল সেই আগামী সংকট মোকাবিলার জন্য জনগণকে প্রস্তুত রাখা। নিবন্ধটি অনুবাদ করেছেন শ্রীপর্ণা মণ্ডল।)   

নোবেলজয়ী জীববিজ্ঞানী জসুয়া ল্যাডারবার্গ বলেছিলেন, “পৃথিবীর বুকে মানবজাতির অব্যাহত আধিপত্যের ক্ষেত্রে এককভাবে সবচেয়ে বড়ো বাধা হল ভাইরাস”। কোভিড-১৯ মহামারি মানব অস্তিত্বের এই বাস্তবতা সম্বন্ধে আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছে।

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের ইতিহাস ও তাৎপর্য, ভিডিও

আমরা যেভাবে পৃথিবীর প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট সঙ্কট নিয়ে চিন্তা করি এবং প্রস্তুতি নিই, তাতে নোভেল করোনা ভাইরাস মহামারি বর্তমানে অবশ্যই আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে।

জিনোমিক্স, জিন এডিটিং সহ জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে, তা রাষ্ট্র ও অন্যান্য বড়ো সংস্থার হাতে অনুজীব বা ভাইরাস নির্মাণের মাধ্যমে জনসাধারণের চিকিৎসা করার বা জৈবিক অস্ত্র তৈরি করার সুযোগ এনে দিয়েছে । জৈবপ্রযুক্তির এই দ্বৈত স্বত্তা আমাদের প্রতিপক্ষর কাজকর্মের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আমাদের সন্দিগ্ধ করে তোলে।

নেট দুনিয়ায় বিভ্রান্তি ও ভুয়ো খবর থাকলেও, এখনও পর্যন্ত কোনো প্রমাণ নেই যে কোভিড ১৯-কে পরীক্ষাগারে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে বা জেনেশুনে অথবা দুর্ঘটনাবশত তা উহানে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ ছড়ানোর উদ্দেশ্যে। কোভিড সংক্রমিত ব্যক্তিরা ইচ্ছাকৃত ভাবে চিন থেকে অন্যান্য দেশে যাত্রা করেছেন রোগ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য, এমনটারও প্রমাণ নেই। প্রমাণ ছাড়াই আঙুল তোলা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। যদিও এমন অভিযোগই আসছে রাশিয়া, চিন বা আমেরিকা থেকে।

যদি কোনো দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন একটি ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে থাকে, তাহলে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব থাকবে। কোভিড ১৯-এর প্রাদুর্ভাব অবশ্যই একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, কিন্তু তা কোনোভাবেই আমেরিকার পুনর্জাগরণের প্রয়োজনীয়তাকেকে কমিয়ে দেয় না।

এই নিয়ে সাতবার করোনাভাইরাস আবির্ভূত হয়ে মানবাজাতিকে সমস্যায় ফেলল। এটি প্রাণীদেহ(মানুষ নয়)থেকে সংক্রমিত হয় যা সম্ভবত কোনো বন্যপ্রাণীর সঙ্গে মানুষের সংস্পর্শের ফলে ছড়িয়েছে। জিনগতভাবে সাদৃশ্যযুক্ত SARS-2003-এর তুলনায় কোভিড ১৯ কম প্রাণঘাতী কিন্তু অনেক বেশি ছোঁয়াচে । একথা কেউ বলতে পারে না যে কোভিড ১৯-এর পরবর্তী বিবর্তিত রূপ(যা অনিবার্য) বর্তমানটির চেয়ে কম ছোঁয়াচে বা প্রাণঘাতী হবে।

জাতীয় সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক এবং হোয়াইট হাউজের  প্রাক্তন পরামর্শদাতা হিসেবে, এই কোভিড মহামারি থেকে আমরা অনেকগুলো গুরত্বপূর্ণ  শিক্ষা পেলাম যা সবমিলিয়ে  এই ধরনের সমস্যার মোকাবিলার জন্য দেশের প্রস্তুতিতে গুণগত পরিবর্তনের দাবি রাখে ।

এক. এই মহামারির তীব্রতার জন্য আমাদের অবশ্যই তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব সবসময় মাথায় রাখতে হবে। কোভিড-১৯ বিবর্তিত হয়ে যদি আরও প্রাণঘাতী হত(নতুন করে বিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা তো আছেই)তাহলে বর্তমানে বিশ্বে অতিমারি যে অবস্থায় রয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি বিপদ হতে পারত।  

আমরা যদি এর থেকে শিক্ষা নিই, যদি আমরা আমূল পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারি, তাহলে আমরা অবশ্যই বৃহত্তর সঙ্কটের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারব।

এই অতিমারির পেছনের ঘটনাবলীকে বিশ্লেষণ করার জন্য এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তা অনুধাবনের জন্য একটি দ্বিপাক্ষিক ৯/১১ ধাঁচের কমিশন গঠন করা দরকার।

দুই. স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরার জন্য চলতি বছরে বিপুল সরকারি বিনিয়োগের প্রয়োজন। আগের ভুলগুলি থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। ২০০১ সালের অ্যানথ্রাক্স আক্রমণ, ২০০৯- এর H1N1 ফ্লু মহামারি এবং ২০০০-এর  SARS সংক্রমণের পর অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল তহবিল গঠন এবং নতুন প্রকল্প তৈরি করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছা কিছুদিন পরই মিলিয়ে যায়।  যে বলিষ্ঠ নীতির মাধ্যমে বহু জীবন বাঁচানো যেতো, অর্থনীতিক বিশৃঙ্খলা কমানো যেত, তা দুঃখজনকভাবে বাস্তবায়িত করা হয়নি।

প্রকৃতপক্ষে, এই অতিমারির আগে পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণা খাতে সরকারি বিনিয়োগ খুবই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতিমারি মোকাবিলার মত সরকারি পরিকাঠামো তৈরিছিল না। যে ক্ষেত্রগুলো অবহেলিত হয়েছে, ধাপে ধাপে তাদের পুনরায় নির্মাণ করা প্রয়োজন।

তিন. আমাদের অবশ্যই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আমাদের অবশ্যই বায়ো-ফরেন্সিক , ডায়াগনোস্টিক, ডিটেকশন, কনট্যাক্ট টেস্টিং, ডেটা শেয়ারিং, কাউন্টার মেজার, মেডিকাল ট্রেনিং, টেলিমেডিসিন, সাধারণ বিজ্ঞান এবং জিনোমিক্স, সংক্ষেপে জাতীয় সঙ্কট মোকাবিলার শক্তিশালী ব্যবস্থা তৈরি রাখতে হবে। গুরুত্ব এবং বিশালত্বের দিক থেকে তা হতে হবে ম্যানহাটন প্রকল্প এবং মহাকাশ কর্মসূচির মতন।

এই লক্ষে পৌছাতে হলে আমাদের নেতাদের অবশ্যই প্রমাণভিত্তিক বিজ্ঞানের সঙ্গে হাত মেলাতে হবে এবং একইভাবে অবৈজ্ঞানিক রাজনৈতিক অপপ্রচার ও অস্বীকারকে বর্জন করতে হবে। তা সে অসুখের আশঙ্কাই হোক বা বিশ্ব উষ্ণায়ণ। এগুলো সবই আগামী দিনের অতিমারির সঙ্গে যুক্ত বিষয়।

চার, আমাদের জাতীয় স্বাস্থ্য, সুরক্ষা এবং অর্থনীতির মধ্যে কোনো কৌশলগত ভারাসাম্য নেই। আমাদের অবশ্যই এই তিনটি বিষয়কে সমান গুরুত্ব দেওয়া দরকার। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এর সুফল পাব।

ঠিক যেমনভাবে আমেরিকার অর্থনীতি, ডিজিটাল অর্থনীতি দ্বারা পরিচালিত হয়, তেমনভাবেই পরবর্তী অর্থনীতিক উল্লম্ফন পরিচালিত হবে জীববিদ্যা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) কে কাজে লাগিয়ে। এই দুই ক্ষেত্রেই, চিনারা নিজেদের বিশাল প্রকল্প চালু করেছে। অর্থনৈতিক, কৌশলগত এবং মানবিক কারণে আমাদের তার সঙ্গে লড়তে হবে।। চিন এবং রাশিয়া উভয়েই বিশ্বাস করে, এই প্রতিযোগিতায় যে দেশ জয়লাভ করবে তারাই পৃথিবী পরিচালনা করবে।

পাঁচ. অত্যন্ত জরুরি দ্রব্যের যোগানের ক্ষেত্রে আমাদের  স্বনির্ভর হওয়ার জন্য ব্যাপক প্রয়াস নিতে হবে। আমেরিকাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ সঙ্কট কালে আমদানির পথগুলি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যেমন কোভিড অতিমারির ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি। এই সংকটকালেও চিন আমাদের ৯০% অ্যান্টিবায়োটিক এবং আমেরিকায় ঔষধ তৈরি করার জন্য যে উপাদান প্রয়োজন তার ৭০% সরাবরহ করছে। এই পরস্থিতি অবশ্যই পালটাতে হবে।

ছয়.  জৈবিক সংকটের সম্ভাবনা নির্ধারণ কঠিন কিন্তু জরুরি। এর জন্য তথ্য সংগ্রহ করা দরকার। ইরাক যুদ্ধের সময়কার ভুলগুলি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা যথাযথ বিশ্লেষণ করেছে। আমরা এই ধরনের জৈবিক সঙ্কটের পূর্বাভাস পাওয়ার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে প্রস্তুত করার সুপারিশ করছি।

সাত. আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের জৈব অস্ত্র সম্মেলন (১৯৭৫)-এর কর্মসূচিকে জোরদার করা উচিত যাতে জৈব অস্ত্রের গবেষণা অনেক স্বচ্ছ হয়।  আমাদের নিজেদের গবেষণা কেন্দ্রগুলি অন্যদের দেখার জন্য খুলে দিতে হবে। উলটোদিকে আমাদের যেভাবেই হোক চিন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, ইরান সহ বিভিন্ন দেশের গোপন পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি দেখার জন্য চাপ দিতে হবে।

আট. বর্তমান অতিমারি প্রমাণ করেছে, এটা কেবল সরকারের কাজ নয়। গবেষণার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনকে তুলে ধরা, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার করে প্রযুক্তিবিদ্যার বিস্তৃতির ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাই বর্তমান পরিস্থিতি ও আগামীদিনের জৈব সঙ্কট মোকাবিলা করার ও সামাধান করার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আছে।

নয়. অতিমারির সময় প্রশাসনিক কাজকর্ম ও ব্যবসাবাণিজ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত । বর্তমান সংকট আমাদের সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার সমস্যাটা স্পষ্ট করেছে। সে সংকট প্রাকৃতিক ভাইরাস থেকেই হোক বা কোনো জৈব বা সাইবার হ্যাকার দ্বারাই তৈরি হোক।

দশ. আমাদের অবশ্যই দেশব্যাপী একটি ব্যাপক এবং স্থিতিস্থাপক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। দূরবর্তী জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে এবং সকলের জন্য ব্রডব্যান্ড ও টেলিমেডিসিন পৌঁছে দিয়ে ; ভালো স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবুং উন্নতমানের শিক্ষার মাধ্যমে গ্রামীণ আমেরিকাকে পুনর্জ্জীবিত করে তুললে আমরা আরও উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে পারব।

জাতীয় সড়ক ব্যবস্থা নির্মাণের জন্যযেভাবে রাষ্ট্রপতি আইজেনহওয়ার ০.৫ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছিলেন। তা দেশের অর্থনীতি ও নাগরিকজীবনের বিকাশের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিল। একইভাবে আমেরিকাব্যাপী সাইবার হাইওয়ে নির্মাণের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। এর দ্বারা আমাদের বর্তমান আর্থিক বুনিয়াদকে বিকেন্দ্রীকৃত করা সম্ভব।

আমরা ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগে পারমাণবিক অস্ত্রের লড়াইয়ে অস্তিত্বের সংকটে পরেছিলাম। তারপরও আমরা আমাদের সাফল্যের আড়ালে জমতে থাকা প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও মানবজাতি সৃষ্ট সংকটগুলিকে উপেক্ষা করেছি । আমাদের পারমাণবিক অস্ত্রের যুগ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত, একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা তৈরি করা উচিত, যাতে জৈব ও সাইবার সঙ্কটের মোকাবিলা করেও  সমাজব্যবস্থা ও শাসনব্যবস্থা অব্যাহত থাকে।

পদার্থবিদ রবার্ট ওপেনহেইমার প্রথম পারমাণবিক বিস্ফোরণ দেখে, ভগবত গীতার একটি পংক্তি উল্লেখ করেন, “ এখন আমি মৃত্যু, সমস্ত বিশ্বের বিনাশকর্তা”। এর মধ্যে দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রাকৃতিক শক্তির অসীম ক্ষমতা সম্বন্ধে তার জ্ঞানউন্মোচনের নিদর্শন পাওয়া যায়।

অতিমারির ধাক্কা থেকে সবে সেরে ওঠা আধুনিক মানব সমাজ হিসেবে আমাদের সামনে একটিই করণীয়, বিজ্ঞানকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া, যা আমরা ১৯৪৫ থেকে করে এসেছি। তবে তা করতে হলে আমাদের আইনস্টাইনের পরামর্শ মাথায় রাখা উচিত ,”মানবজাতির অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের একটি নতুন উন্নত মানের চিন্তন পদ্ধতি প্রয়োজন” ।

জোয়েল ম্যাকক্লিয়ারি ( কার্টার প্রশাসনে কাজ করেছেন। একজন জৈব প্রতিরক্ষাবিদ)

মার্ক মেডিশ ( ক্লিন্টন প্রশাসনে জাতীয় সুরক্ষা কাউন্সিলে কাজ করেছেন )

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *