পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: করোনাভাইরাসকে কাজে লাগিয়ে দুনিয়া জোড়া গণ আন্দোলনকে থামিয়ে রাখার সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা ধাক্কা খেল লেবাননে। আর্থিক সংকটে দীর্ণ দেশটিতে কোভিড ১৯ মোকাবিলায় লকডাউন জারি হয়েছে। তাতে মানুষের দুর্গতি চরমে উঠেছে।
আরও পড়ুন: দুনিয়া জোড়া প্রতিবাদী আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিয়েছে করোনাভাইরাস
জিনিসের দাম তো বেড়েছেই, সঙ্গে বাড়ছে বেকারি। স্বাভাবিক ভাবেই অচেনা ভাইরাসের থেকে চেনা অর্থকষ্ট ও ক্ষুধাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন সে দেশের নাগরিকরা। প্রতিবাদে পথে নেমে পড়েছে যুব সমাজ। সোমবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে ত্রিপোলি শহরে এক প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়। তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার ত্রিপোলি, বেইরুট সহ বহু দেশে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে মানুষে। ব্যাঙ্ক, সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে সেনা।
দক্ষিণের সিদন শহরে প্রতিবাদীরা ব্যাঙ্কে পেট্রোল বোমা ছোঁড়ে। এটিএম, ব্যাঙ্কের দরজা ভাঙচুর করা হয়। তাদের গলায় ছিল ‘বিপ্লব’ বলে চিৎকার। মানুষের জমানো টাকা ব্যাঙ্কগুলি আটকে দেওয়ায় জনগণের ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে ব্যাঙ্কের ওপর। রাজধানী বেইরুটে মিছিলে বেরোন অনেকে। অনেকের মুখে ছিল মুখোশ।তারা আরও নাগরিককে পথে নামতে আহ্বান জানাচ্ছিলেন। মিছিল থেকে সেনাবাহিনীর দিকে ঢিল ছোঁড়া হয়। যদিও সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ককে সুরক্ষিত রাখে বাহিনী।
গত বছরের অক্টোবর থেকে আর্থিক দুরবস্থা, রাজনৈতিক নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলনে উত্তাল পশ্চিম এশিয়ার দেশটি। সে সময় থেকেই সে দেশের মুদ্রা লেবানিজ পাউন্ডের দাম ডলারের তুলনায় কমছে। গত সপ্তাহে তা প্রায় অর্ধেকে পরিণত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে এই ‘নতুন বাস্তব পরিস্থিথিতে’ ঘরে থাকতে অনুরোধ করেছেন। পাশাপাশি তার গলায় কর্তৃত্ববাদী শাসকের চেনা সুর। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিবাদের পর্দার আড়ালে যারা রয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্য খারাপ’।
লকডাউনের জেরে গোটা দুনিয়ার প্রতিবাদী আন্দোলন যখন স্তব্ধ, তখন লেবাননের এই বিক্ষোভ থমথমে পরিস্থিতিতে স্ফূলিঙ্গ তৈরি করল কিনা, তা সময় বলবে।