পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: স্ত্রী সাবিমা ৬ মাসের গর্ভবতী। চিন্তায় ঘুম হচ্ছে না পরিযায়ী শ্রমিক হাসান মল্লিকের। হাসানের বাড়ি হুগলি জেলার তারকেশ্বরের গয়েশপুর গ্রামে। দেড় বছর আগে ভূমিহীন পরিবারের সন্তান হাসান পেট চালাবার তাগিদে গ্রাম ছেড়ে স্ত্রী আর ১১ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাসা বেধেছিলেন দিল্লিতে। কাজ করতেন জরি শিল্পে। লকডাউনের পর লাখ লাখ শ্রমিকের মত তিনিও চরম দুরবস্থায় পড়েছেন। তিনি না হয় না খেয়ে বা আধপেটা খেয়ে কাটিয়ে দেবেন কিন্তু স্ত্রী সন্তান বিশেষত গর্ভস্থ শিশুটির কি হবে তাই নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না। ১৯ তারিখে মোদি সরকারের পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে ফেরা নিয়ে সরকারি নোটিশ আসার পরে কাজে ফেরাবার ব্যবস্থা হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন “কেউ কাজের জন্য ডাকেনি, এই নিয়ে আমি কিছু জানিনা। আমাদের যা অবস্থা ছিলো তাই আছে। বরং আরো খারাপ হচ্ছে। কিছু সাহায্য পেয়েছিলাম। কিন্তু সে সব শেষ হয়ে গেছে। হাসান আরো বল্লেন “আমাদের কে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুক সরকার। সব টাকা শেষ। কোনো কাজ নেই” ।
আরও পড়ুন: হায়দরাবাদে আটকে রাজ্যের ১২০০ শ্রমিক, মুখ খুলছেন না মালিকের ভয়ে
দিল্লি সরকারের তরফে কোনো সাহায্য এসেছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে সাবিনা জানালেন “এখানে সরকার দিনে দু বার দুটো রুটি আর আচার খেতে দিচ্ছে। আমরা এসব খেতে পারি বলুন? পেটের বাচ্চাটাকে নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। অষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে। খাবার কিনে খাওয়ারই পয়সা নেই!”
হাসান আর সাবিমাই শুধু নন। দেশের নানা প্রান্তে নানা সংকটে জেরবার রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা। সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর ঘোষণায় তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। কিন্তু কবে আসবে সেই সুদিন, এখনও তারা বুঝতে পারছেন না।