পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: গত ৪ এপ্রিল লকডাউনের মধ্যে নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানা এলাকার ধাপারিয়া গ্রামে পুলিশ ও সমাজবিরোধীদের গ্রামবাসীদের যৌথ আক্রমণের খবর প্রকাশিত হয়েছিল এই পোর্টালে। সেখানেই জানানো হয়েছিল পুলিশের নির্মম অত্যাচারের ঘটনা। সেটিন স্থানীয় তিনটি থানার পুলিশ ও সমাজাবিরোধীদের দল এলাকার সংগ্রামী কৃষক মঞ্চের দফতর ভেঙে দেয়। মঞ্চের সদস্যদের ওপর অত্যাচার করে এবং বড়িঘর ভাঙচুর ও প্রচুর টাকা লুঠ করে।
সেই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানতে সম্প্রতি এলাকায় গিয়েছিল মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের কৃষ্ণনগর শাখার তথ্যানুসন্ধানী দল। ওই দল তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, পুলিশ সেদিন গ্রামবাসীদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসা করেছে, ‘মাওবাদীরা কখন আসে, কোথায় মিটিং করে’ ইত্যাদি প্রশ্ন। সেদিন তারা এক মহিলা ও শিশু সহ চারজনকে ধরেও নিয়ে যায়। ধুবুলিয়া থানায় অন্যতম ধৃত কারণ দফাদারকে ব্যাপক মারধর করা হয়। গরিব চাষি কারণ অস্ত্র বানায় কিনা, তাও জানতে চাওয়া হয়। ১০ বছরের নাবালককে মায়ের থেকে আলাদা করে বাড়িতে কারা এসে মিটিং করে, তা জিজ্ঞাসা করা হয়।
সেদিনের পর নতুন করে ভাঙচুর না হলেও নিয়মিত গ্রামে পুলিশ আসছে। হুমকি দিচ্ছে, রেইড করছে। পুলিশের ঘরে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী ঘরছাড়া। অসহায় গ্রামবাসীরা যখন লকডাউনের সমস্যায় জর্জরিত, তখন এই সমস্যা তাদের জীবনযন্ত্রণাকে বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানী দলের বক্তব্য, সাম্প্রতিক কালে সংগ্রামী কৃষক মঞ্চ খেত মজুরদের মজুরি বৃদ্ধি, ফসলের ন্যায্য দাম, ১০০ দিনের কাজকে সারা বছরের কাজে পরিণত করার জন্য এলাকায় বেশ কিছু আন্দোলন করেছে। তার জেরেই এলাকার সমাজবিরোধীদের কায়েমি স্বার্থে ঘা পড়েছে। সেজন্যই পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে সন্ত্রাস চালাচ্চে তারা। লকডাউনের পরিস্থিতিতে অত্যাচার চালানো তুলনামূলক সহজ হয়েছে পুলিশের পক্ষেও।
লকডাউনে যেখানে গরিব মানুষের জীবন এমনিতেই গভীর সংকটে, তখন এ ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা করেছে এপিডিআর।