লকডাউন চলাকানীল সময় কর্মীদের বেতন দিতে কাউকে বাধ্য করা যায় না: সংসদীয় কমিটি
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: শ্রম বিষয়ক সংসদীয় কমিটি তাদের ‘শিল্প সম্পর্ক সংক্রান্ত কোড ২০১৯’ নিয়ে রিপোর্টটি বৃহস্পতিবার জমা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে নতুন করে কলকারখানা চালু না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন দিতে বলা অন্যায্য”। কমিটির চেয়ারম্যান, বিজেডির প্রবীণ সাংসদ ভত্রুহরি মাহতাব বলেছেন, করোনার জেরে জারি হওয়া বর্তমান লকডাউনকেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবেই দেখতে হবে।
বিদ্যুৎ, কাঁচামাল, কয়লা ইত্যাদির অভাবের কারণে শ্রমিকদের কাজ দিতে না পারলে ৪৫ দিন পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতনের ৫০% দেওয়ার কথা নিয়োগকর্তাদের বলা হয়েছে ওই কোডে। কিন্তু ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়’-এর ক্ষেত্রে সে কথা বলা হয়নি। কারণ এক্ষেত্রে ‘নিয়োগকর্তার কোনো দোষ নেই’। নিয়োগকর্তারা যাতে ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে’ বেতন না দিয়ে কোনো সমস্যায় না পড়েন, তার জন্যই রিপোর্টে এ কথা স্পষ্ট ভাষায় লেখা হয়েছে, বলে কমিটির তরফে জানানো হয়েছে।
“আমাদের সুপারিশের মূল কথা হল, পরিস্থিতি শিল্পকর্তাদের হাতের বাইরে থাকলে, তাদের ওপর যেন কোনোরকম চাপ সৃষ্টি করা না হয়। আইন যুক্তিসম্মত হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে এবং শিল্পকে সাহায্য করতে হবে”। বলেন মাহতাব।
কমিটির তিন সদস্য এই সুপারিশের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। এরা হলেন, সিপিএমের রাজ্যসভার সদস্য এলামারাম করিম, সিপিআই-এর লোকসভার সদস্য কে সুব্বারায়ন এবং ডিএমকে-র এম সম্মুগম।
তিনটি আইন যোগ করে তৈরি করা হয়েছে শল্প সম্পর্ক সংক্রান্ত কোড,২০১৯। এগুলি হল- শিল্প সমস্যা আইন, ১৯৪৭, ট্রেড ইউনিয়ন আই, ১৯২৬ ও শিল্প নিয়োগ(স্থায়ী নির্দেশ) আইন, ১৯৪৬। এই কোডটি গত বছরের নভেম্বরে লোকসভায় পেশ হয়, ডিসেম্বরে শ্রম বিষয়ক স্থায়ী কমিটির কাছে যায়। লকডাউন চলাকালীন, ১৫ এপ্রিল খসড়া রিপোর্টটি কমিটির সব সদস্যদের কাছে পাঠানো হয়। তাদের আট দিনের মধ্যে মতামত জানাতে বলা হয়। চূড়ান্ত রিপোর্ট বৃহস্পতিবার লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা গ্রহণ করেন।
দেখাই যাচ্ছে, শ্রম সংক্রান্ত কমিটি হলেও তাদের মূল দায়িত্ব মালিকদের স্বার্থরক্ষা। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে মেহনতি মানুষের দিন গুজরান কীভাবে হবে, তা নিয়ে কোনো সুপারিশ করেনি ওই কমিটি। সরকারি হস্তক্ষেপের গোলগোল কথা বলেই দায় সেরেছে। মালিকদের অধিকার নিয়ে স্পষ্টতা থাকলেও, শ্রমিকদের পাওনা নিয়ে অস্পষ্টতা রাখাই এদেশে দস্তুর।