পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: করোনা রোধে সরকারি নির্দেশিকা ভেঙেপ্রতিবাদ অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার অপরাধে শাহিনবাগ থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন ৩ জন। গত রবিবার দিল্লি হাইকোর্ট ঐ তিন আন্দোলনকারীর জামিন দেয়। কিন্তু জামিনের শর্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দালনকারী আর মানবাধিকার কর্মীরা। জামিনের শর্ত হিসেবে হাই কোর্ট বলেছে যে ঐ তিন জন স্যোশাল মিডিয়ায় এনআরসি- সিএএ- এনপিআর নিয়ে কোনো কথা বলতে পারবে না।
কমিটি ফর রিলিজিং অফ পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি সুজাত ভদ্র বলেন “এই রায় অপ্রত্যাশিত। বিচার ব্যবস্থার ক্রমশ সরকার ঘেঁষা হয়ে যাওয়ার চিহ্নগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আইনত জামিনের শর্ত দিতে পারেন বিচারক। সেক্ষেত্রে কী শর্ত দেবেন সেটা নির্দিষ্ট করে বলা নেই। সাধারণত নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে না বেরনো, নির্দিষ্ট সময় অন্তর থানায় হাজিরা দেওয়া বা মামলা নিয়ে কথা না বলা, এই ধরনের শর্ত দেওয়া হয়ে থাকে। যেমন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে বলা হয়েছে নির্দিষ্ট মামলা নিয়ে কথা না বলতে। কিন্তু তিনি তো রাজনৈতিক সভা করছেন”।
মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত সুর বল্লেন “মাননীয় বিচারপতি বোধহয় নাগপুরের হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি থেকে আইন পাশ করেছেন। তাই তিনি জানেন না যে, মত প্রকাশের অধিকার একজন নাগরিকের সংবিধানপ্রদত্ত মৌলিক অধিকার। আর্টিকেল ১৯। যা ইচ্ছামতো কেড়ে নেওয়া যায় না। সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। বিচারপতিও তা মানতে বাধ্য। কাজেই সোসাল মিডিয়ায় তার মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নিয়ে বিচারপতি অধিকার বহির্ভুত বে-আইনি কাজ করেছেন। সিএএ বা এনআরসি নিয়ে মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে সরকারকে খুশি করতে চেয়েছেন। এটাই আজকের বিচারব্যবস্থার সাধারণ চরিত্র হয়ে উঠছে। যা খুবই উদ্বেগের। জামিনের অন্য শর্তাবলীও যথেস্ট কড়া। তারপরও এধরনের নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ব্যক্তি স্বার্থবাহী, উদ্বেগজনক।”
এনআরসি-এনপিআর প্রতিরোধ মঞ্চের আহ্বায়ক ডাক্তার আনোয়ার হোসেনকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন “হাই কোর্টের অর্ডার দেখিনি। তবে এনআরসি, এনপিআর, সিএএ নিয়ে কিছু বলা যাবে না, দিল্লি হাইকোর্ট এমন নির্দেশ দিয়ে থাকলে তা বাক স্বাধীনতার অধিকার হরণ করবে। সরকার চাইছে করোনার অজুহাতে এনআরসি বিরোধী আন্দোলন ভেঙে দিতে। বুল ডোজার দিয়ে শাহিনবাগের প্রতিবাদ মঞ্চ ভেঙে দেওয়া তার উদাহরণ। লক ডাউন করার নামে দেশজুড়ে পুলিশি রাজ চলছে। পশ্চিমবঙ্গ তার ব্যতিক্রম নয়।লক ডাউন উঠলে এনআরসি বিরোধী আন্দোলন আবার শুরু হবে। আশা করি অন্য সংগঠনগুলি এবার যৌথ আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা বুঝবেন” ।