করোনা ভাইরাস: দুনিয়া জুড়ে শ্রমিকরা লড়ছেন সবেতন ছুটির দাবিতে
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: শ্রমিক শ্রেণির নতুন সামনে নতুন বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে করোনা ভাইরাস। যদিও তার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য আসল লড়াইটা চালাতে হচ্ছে চিরকালীন শশ্রু মালিকপক্ষের সঙ্গেই। মহামারি পরিস্থিতিতে দুনিয়া জুড়ে শ্রমিকরা এখন লড়ছেন সবেতন অসুস্থতাকালীন বাড়তি ছুটির জন্য, বাধ্যতামূলক হাজিরার বিরুদ্ধে এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তার দাবিতে। কোনো কোনো সংস্থা বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎপাদন বন্ধ রাখলেও অনেক জায়গাতেই শ্রমিকদের লড়তে হচ্ছে।
সোমবার স্পেনের বাস্কে মার্সেডিজ-বেঞ্জ সংস্থার ৫০০০ শ্রমিক ধর্মঘট করেন। ফলে প্ল্যান্ট বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। ওই সংস্থার ১ জন শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, ২৩ জনকে সন্দেহের বশে আলাদা করে রাখা হয়েছে। নিশাল, ভোকসওয়াগন, রেনল্ট, মিচেলিনের মতো গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা ইতিমধ্যে উৎপাদন বন্ধ করে দিলেও মার্সেডিজ বেঞ্জ তা করতে চাইছিল না।
ইতালির বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে মাধেমধ্যেই ধর্মঘট করছেন। উৎপাদন আংশিক বা পুরো বন্ধের দাবি, পরিচ্ছন্নতার উন্নত ব্যবস্থা, ভালো যন্ত্রপাতির দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। গোটা দেশ কার্যত স্তব্ধ। এর মধ্যে শ্রমিকদের কাজে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। ইতালি সরকার ‘জরুরি নয়’ এমন সমস্ত পণ্যের উৎপাদন বন্ধ রাখতে বললেও, এই নিয়ে কোনো আইন জারি করেনি, সংস্থাগুলিকে নিজেদের মতো ব্যবস্থা নিতে বলেছে। এই পরিস্থিতিতে গাড়ি কারখানা, জাহাজ তৈরির কারখানা, ছেলেদের পোশাক তৈরির কারখানায় উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছিল সংস্থাগুলি।
কেনটাকির লুইসভিলিতে ফোর্ড সংস্থার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্রমিকদের জন্য ১৪ দিনের সবেতন অসুস্থতাজনিত ছুটির দাবি জানিয়েছেন। সেখানে এখনও কেউ আক্রান্ত না হলেও, কোনো ঘটনা ঘটার আগেই পদক্ষেপ করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি। একই দাবি উঠেছে ম্যাসাচুসেটসের জেনারেল ইলেকট্রিকের শ্রমিক এবং ওহিও ডিসির ৩০০০০ দোকান কর্মচারীর ইউনিয়নের তরফে। আমেরিকা জুড়ে এমন দাবি উঠেছে অন্যত্রও।
নিউ ইয়র্ক সিটি স্কুল চালু রাখায় আন্দোলনে নামেন শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মচারীরা। দলে দলে শিক্ষকরা অসুস্থতাজনিত ছুটি নিতে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে রবিবার সরকারের পক্ষ থেকে সব স্কুল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই ঘটনা ঘটেছে শিকাগোতেও।
এছাড়া আমেরিকার আরও বিভিন্ন প্রদেশে পরিচারক, হাসপাতাল কর্মচারীরা একই দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে সাফল্য় অর্জন করেছেন।
গত আট দিনে দুনিয়া এমন অনেক শ্রমিক আন্দোলন দেখেছে।আগামীতে কী রয়েছে, তা দেখার।
আমরা নজর রাখবো ভারতের পরিস্থিতিতেও। ইতিমধ্যে গো এয়ার বিমান সংস্থা তার কর্মীদের ভাগে ভাগে বেতনহীন ছুটিতে পাঠিয়েছে যাত্রীর অভাবে।