সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের ধাক্কায় শ্রম সংস্কার নিয়ে আপাতত পিছু হঠল কেন্দ্র
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস হওয়ার পর এক মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু দেশজুড়ে সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলন থামার কোনো লক্ষণ নেই। বরং তা নানা রূপে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের নানা প্রান্তে। তবু ধর্মের আফিম দিয়ে এই এই আইনের পক্ষে লড়ে চলেছে বিজেপি। কিন্তু চাপ বাড়ছে প্রতিদিন। এই অবস্থায় নতুন বিপদ ঘাড়ে নিতে চাইল না বিজেপি এবং তাদের প্রভু আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বৃহৎ পুঁজিপতিরা।
শ্রম আইন সংস্কার নিয়ে আপাতত পিছু হঠল তারা। সিএএ বিরোধী আন্দোলনের রাশ রয়েছে মূলত মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাতে। তাদের আন্দোলনকে একটা সীমার মধ্যে আটকে রাখা তুলনামূলক ভাবে সহজ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক আন্দোলন জঙ্গি রূপ ধারণ করলে সামলানো মুশকিল। সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গেছে, দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে কোনো আন্দোলন একবার শুরু হলে তা কিছুতেই থামতে চাইছে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া শোষিত মানুষের ক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। সেই অভিজ্ঞতা এবার চালিত করল ভারতের ফ্যাসিবাদী শাসকদের।
দেশের ৪৪টি শ্রম আইনকে চারটি শ্রম কোডের সীমানায় নিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার মধ্যে ন্যূনতম মজুরি সংক্রান্ত কোডটি সংসদে পাস হয়ে গেছে।কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত কোডটি শ্রম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছিল বিস্তারিত আলোচনার জন্য। এবার বাকি দুটি কোডেরও একই গন্তব্য হল। বুধবার শ্রম ও নিয়োগ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিল্প-সম্পর্ক সংক্রান্ত কোড এবং সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত কোডদুটিও ভার্ত্রুহরি মাহতাব-নেতৃত্বাধীন শ্রম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে।এ বিষয়ে বিভিন্ন দল, ট্রেড ইউনিয়ন ও অংশীদারদের মতামত নেওয়া হবে।
দেশের কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি বারবার সরকারকে শ্রম আইন সংস্কারের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করতে বারণ করেছিল। কিন্তু সরকার পাত্তা দেয়নি। এবার দেশজুড়ে সিএএ-এনআরসি বিরোধী জঙ্গি গণ আন্দোলন এবং ৮ জানুয়ারির শ্রমিক ধর্মঘটে ব্যাপক শ্রমিকের অংশগ্রহণ তাদের পিছু হঠতে বাধ্য করল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ওই কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবে তবে তারা চাইলে আরও সময় নিতে পারে। অর্থাৎ বাজেট অধিবেশনে ওই তিনটি কোড পাস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বাজেট অধিবেশন শেষ হচ্ছে ৩ এপ্রিল।
প্রসঙ্গত, শিল্প সম্পর্ক সংক্রান্ত কোডের মধ্যে রয়েছে, মালিকের কোনো শ্রমিকের প্রয়োজনমতো নিয়োগ ও ছাঁটাই করা অধিকার, ট্রেড ইউনিয়নের দর কষাকষির ক্ষমতা কমানো, শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলি।
আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন ৮ তারিখের ধর্মঘটে অংশ না নিলেও, তারা কেন্দ্রকে শ্রম সংস্কার বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা চিঠি লিখে জানিয়েছে।