পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা। অন্যদিকে জেডি(ইউ)-র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তৃণমূল কংগ্রেস ঘোষিত ভাবে সিএএ-এনআরসি-র বিরুদ্ধে। রাজ্যে এনপিআর স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু জেডি(ইউ) সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে সমর্থন করেছে। বিহারে জেডিইউ-বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মুখ না খুললেও সে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজেপির সুশীল মোদি ঘোষণা করে দিয়েছেন বিহারে এনপিআর হবে। সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও জারি করে দিয়েছে বিহার সরকার। এই পরিস্থিতিতে চমক দিলেন প্রশান্ত কিশোর।
জেডি(ইউ) সংসদে সিএএ সমর্থন করার পর প্রকাশ্যেই তার বিরোধিতা করেছিলেন পিকে। রবিবার তিনি টুইট করে জানিয়ে দিলেন, বিহারে সিএএ-এনআরসি হবে না। পাশাপাশি কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি সিএএ-এনআরসি-র বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণ করায় প্রশান্ত কিশোর রাহুল গান্ধি ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধিকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশান্তের এই ঘোষণায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বিহারের রাজনৈতিক মহলে। প্রশান্তকে ‘বেশি বুদ্ধিমান ও সবজান্তা’ বলে আক্রমণ করে বিজেপি বলেছে, ভারতে আমেরিকার মতো দ্বৈত নাগরিকত্বের ব্যবস্থা নেই। এখানে কেন্দ্রীয় আইন সব রাজ্য মানতে বাধ্য। পাশাপাশি তাদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী যেখানে বলে দিয়েছেন এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এখন কোনো ভাবনা নেই, সেখানে প্রশান্তের মতো লোকেরা অকারণে এনআরসি-র কথা বলে লোক ক্ষ্যাপাচ্ছেন।
বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে জেডিইউ-র মধ্যেও। তাদের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দলে গণতন্ত্র আছে, কোনো বিষয়ে কারও কোনো দুশ্চিন্তা হলে সেই বিষয়ে তিনি মুখ খুলতেই পারেন। তবে দলে কোনো সমস্যা নেই। গোটা দল মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের পাশে আছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সিএএ-এনআরসি-র বিরোধিতা করা আর ‘বিহারে সিএএ-এনআরসি হবে না’ ঘোষণা করা এক নয়। সরকারের যা ঘোষণা করার কথা, তা প্রশান্ত কীভাবে ঘোষণা করতে পারেন! নীতীশ কুমারের সঙ্গে আলোচনা না করেই কি প্রশান্ত এত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করে দিলেন? পাশাপাশি কংগ্রেসকে ধন্যবাদ জানানোতেও চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। কারণ এ বছরই বিহারে বিধানসভা ভোট। প্রশান্তর অবস্থান থেকে পরিষ্কার, বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে নতুন রাজনৈতিক বিন্যাসের পথে হাঁটতে পারে নীতীশ কুমারের দল।
বিহার জুড়ে সিএএ-এনআরসি-র বিরুদ্ধে তীবর্ গণ আন্দোলন চলছে। একমাত্র সেই রাজ্যেই সিএএ-এনআরসি ইস্যুতে দুটি বন্ধ হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, গণ আন্দোলনের চাপে শাসক শ্রেণির পুরনো সব পরিকল্পনা ঘেঁটে গেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তাদের নতুন করে কৌশল সাজতে হচ্ছে।