পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: সেই কবে ২০০৬ সালে বনবাসীদের অরণ্যের অধিকার দিতে সংসদে পাস হয়েছিল অরণ্যের অধিকার আইন। কিন্তু কোনো সরকারই সএই আইন কার্যকর করতে কোনো পদক্ষেপ করেনি। রাজ্য সরকারগুলিও নিষ্ক্রিয় থেকেছে। আসলে লোকদেখানো আইন করলেও কর্পোরেট পুঁজির চাপ রয়েছে। দেশের জল, জঙ্গল, জমি লুঠ করেই মুনাফার পাহাড় গড়ে তারা। এই আইন প্রয়োগ হলে তাতে বাধা সৃষ্টি হবে।
সেই লক্ষ্যে পুরনো বন আইনকে নতুন ভাবে ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে কেন্দ্রীয় সরকারের ভেতরে। তাতে অরণ্য দফতরের অধীনে কারাগার তৈরিরও সংস্থান রয়েছে। যুগ যুগ ধরে যারা বনে রয়েছেন, তাদেরকে উচ্ছেদ করার আইন তৈরির কাজ চলছে। বলা হচ্ছে, শুধু কৃষিকাজ করা যাবে বনে, থাকা যাবে না।গাছ কাটলে জেলল হবে। চোরাশিকারি আর অরণ্যচারী মানুষকে গুলিয়ে দেবে নতুন আইন। অরণ্যের বড়ো এলাকা ঘিরে দেশি-বিদেশি কর্পোরেটরা যাতে অর্থকরী চাষ করতে পারে, তারই উদ্যোগ এসব। কিন্তু সেই আইন এখনও হয়নি।
পুরনো যে আইন রয়েছে, সেই অনুযায়ী যারা বনে থাকেন, তাদের থাকার অধিকার পেতে হলফনামা দিতে বলা হয়েছিল আদালত থেকে। বলাবাহুল্য সেই হলফনামা দিতে পারেননি বহু আদিবাসী। তাই গত ফেব্রুয়ারিতে এক রায়ে ১২ লক্ষ আদিবাসীকে উচ্ছেদের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তখন সামনে লোকসভা ভোট ছিল। সব রাজ্য এমনকি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও সময় চায় আদালতের কাছে। ফেব্রুয়ারির শেষে তাই উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। আগামী ২৬ নভেম্বর সেই মামলার পরবর্তী শুনানি।কিন্তু আদিবাসীদের অভিযোগ, স্থগিতাদেশ থাকলেও তাদের অরণ্য থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলায় ১০ হাজার আদিবাসীর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করা হয়েছে। অভিযোগ তারা অন্যায় ভাবে অরণ্য দখল করে রেখেছেন।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্র্প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও আরও বিভিন্ন রাজ্য থেকে কয়েকহাজার আদিবাসী প্রতিবাদ জানালেন দিল্লিতে গিয়ে। নিজেদের এত বছরের বাসস্থান না ছাড়ার অঙ্গীকার করলেন। বললেন, যে সরকার-আদালত তাদের বন থেকে উচ্ছেদ করতে চাইছে, তারা কি অরণ্যকে জন্ম দিয়েছে, দেখভাল করেছে? সেই কাজটাতো তারাই করে আসছেন যুগযুগ ধরে। দেশের প্রায় ৬০টি আদিবাসী ও কৃষক সংগঠন যোগ দিয়েছিল এদিনের জমায়েতে।
ছবি সৌজন্য: স্ক্রোল ডট ইন