কার্ফু, কাঁদানে গ্যাস, দেশজোড়া ধর্মঘট, লাতিন আমেরিকার চলমান বিক্ষোভে সামিল এবার কলোম্বিয়া
পিপলস ম্যাগাজিন: দু’মাস ধরে উত্তাল লাতিন আমেরিকা। ইকুয়েডর, চিলি, বলিভিয়া- একের পর এক আছড়ে পড়ছে গণবিক্ষোভ। বিক্ষোভ সবচেয়ে বড়ো ও দীর্ঘস্থায়ী আকার নিয়েছে চিলিতে। এবার সেই বিক্ষোভে সামিল হল কলোম্বিয়া।
আরও পড়ুন: উচ্ছেদের প্রতিবাদ ও অরণ্যের অধিকারের দাবিতে দিল্লিতে হাজারও আদিবাসীর সমাবেশ
দক্ষিণপন্থী প্রেসিডেন্ট ইভান ডিউকের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বিভিন্ন সংগঠনের যৌথমঞ্চ। ধর্মঘট চূড়ান্ত সফল বললে কিছুই বলা হয় না। এদিন দেশের নানা শহরে মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ। শুধু রাজধানী বোগোটাতেই হেঁটেছেন ২ লক্ষ ৭ হাজারেরও বেশি। সারাদিন ধরে মিছিল চলে। বিভিন্ন শহর জুড়ে টিনের বাসন বাজিয়ে প্রতিবাদীদের উৎসাহিত করেন সাধারণ মানুষ। এই ধরনের প্রতিবাদ লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশে হলেও কলোম্বিয়ায় নতুন।
বেকারি, অবসরের বয়স বাড়িয়ে দেওয়া, আর্থিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে পেনসন কমানোর পরিকল্পনা, আই-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, মূল্যবৃদ্ধি সহ নানা ইস্যুতে জোট বেঁধেছেন ছাত্র, শ্রমিক ইউনিয়ন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। গত এক বছরে কলোম্বিয়ায় নিহত হয়েছেন একশরও বেশি মানবাধিকার কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে আসা ফার্কের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া জটিল হয়েছে ডিউক ক্ষমতায় আসার পর। বেড়েছে ড্রাগ কারবারিদের বোলবোলাও। এছাড়া রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আমলাতন্ত্রে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। দাবি রয়েছে বেকারদের জন্য বেকার ভাতারও। সব মিলিয়ে আগ্নেয়গিরির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশ। ধর্মঘট কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট যদি প্রতিবাদীদের সঙ্গে সরাসরি কথা না বলেন, তাহলে এই আন্দোলন আরও জঙ্গিরূপ নেবে।
এদিন রাজধানী বোগোটা, মেএডেলিন, কালি সহ বিভিন্ন শহরে পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে। কালিতে কার্ফু জারি করা হয়। ৩৭ জন পুলিশ ও ৪২ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। গ্রেফতার হয়েছেন ৩৬ জন।
ধর্মঘট কমিটি সংলাপের দাবি করলেও প্রেসিডেন্ট সে আশ্বাস দেননি। যদিও বলেছেন, জনগণের দাবি তিনি শুনেছেন। সমাজের নানা স্তরের সঙ্গে কথা বলতে তার সরকার আগ্রহী। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জনগণের অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন ডিউক। যদিও অশান্তি যারা করছে বা করবে, তাদের ছেড়ে কথা বলা হবে না বলে হুমকিও দিয়েছেন। ধর্মঘটের আগের দিন থেকেই পেরু, ব্রাজিল, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর- এই চারটি দেশের সঙ্গে কলোম্বিয়ার সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।