অন্তর্ভূক্তির চুক্তি
১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর মহারাজা হরি সিং কর্তৃক অন্তর্ভূক্তির চুক্তি
ভারতের স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭ অনুসারে আগস্টের ১৫তম দিন থেকে ‘ইন্ডিয়া’ নামে একটি স্বাধীন রাজ্য তৈরি হবে এবং ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন অনুসারে ভারত রাজ্য গভর্নর জেনারেলের নির্দেশ মতো সেখান থেকে কোনো অংশ বাদ দিতে, যোগ করতে, অঙ্গীকরণ করতে বা পরিমার্জন করতে পারবে।
গভর্নর জেনারেলের গ্রহণ করা ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন অনুসারে ভারত নামে একটি রাষ্ট্র তার শাসক কর্তৃক অন্তর্ভূক্তির চুক্তির দ্বারা ভারত রাজ্যের অঙ্গীভূত হতে পারে।
এখন, অতএব, আমি শ্রীমান ইন্দর মহি্ন্দর রাজেশ্বর মহারাজাধিরাজ শ্রী হরি সিংজি, জম্মু ও কাশ্মীর নরেশ তথা তিব্বত আদি দেশাধিপতি, জম্মু ও কাশ্মীর রাষ্ট্রের শাসক, রাষ্ট্রের ওপর আমার সামগ্রিক সার্বভৌমত্ব ব্যবহার করে এতদ্বারা আমার অন্তর্ভূক্তিকরণ প্রয়োগ করছি এবং
১) আমি ঘোষণা করছি, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ভারত রাজ্যে যে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন কার্যকর হয়েছে(এরপর থেকে ‘আইনটি’ বলে উল্লেখ করা হবে), সেই আইন অনুযায়ী আমি ভারত রাজ্যের অঙ্গীভূত হলাম এবং ভারতের গভর্নর জেনারেল, আইনসভা, শীর্ষ আদালত এবং ভারত রাজ্যের প্রয়োজনে তৈরি যে কোনো প্রতিষ্ঠান এই চু্ক্তির দৌলতে এবং তাদের শর্তে এবং ভারত রাজ্যের প্রয়োজনে জম্মু ও কাশ্মীর রাষ্ট্রে(এরপর থেকে ‘রাষ্ট্রটি’ বলে উল্লেখ করা হবে)ওই আইন অনুযায়ী কাজ করবে।
২) এই অন্তর্ভূক্তির চুক্তি দ্বারা ওই আইনটির প্রয়োগযোগ্য ধারাগুলি যাতে রাষ্ট্রে কার্যকর হয় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।
৩) তালিকার যে সব বিষয়গুলির ক্ষেত্রে ভারতের আইনসভা জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য আইন প্রণয়ন করতে পারবে, সেই বিষয়গুলি আমি মেনে নিচ্ছি।
৪) আমি ঘোষণা করছি, এই আশ্বাস দিয়েই আমি ভারত রাজ্যের অঙ্গীভূত হচ্ছি যে, রাষ্ট্রের প্রশাসনিক বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত ভারতের আইন সভার তৈরি কোনো আইন জম্মু ও কাশ্মীরের শাসক কর্তৃক প্রয়োগের বিষয়ে যদি রাষ্ট্রের শাসক ও গভর্নর জেনারেলের মধ্যে কোনো চুক্তি হয়, তাহলে তা সেই মতোই কার্যকর করা হবে।
৫) ভারতের স্বাধীনতা আইন, ১৯৪৭-এর কোনো সংশোধন হলেও এই অন্তর্ভূক্তির চুক্তির কোনো পরিবর্তন হবে না, যদি না সেই সংশোধনী আমি এই এই অন্তর্ভূক্তির চুক্তির সংযোজনী হিসেবে আমি গ্রহণ করি।
৬) এই চুক্তির কোনো অংশ দ্বারাই ভারতের আইনসভা এই রাষ্ট্রের কোনো জমি বাধ্যতামূলক ভাবে অধিগ্রহণ করতে পারবে না, ভারতের কোনো আইনের প্রয়োজনে (যা এই রাষ্ট্রে প্রযোজ্য) যদি এখানে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হয়, তাহলে আমি তাদের অনুরোধে তাদের ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ করে দেওয়ার দায়িত্ব নিচ্ছি, যদি সেই জমি আমার নিজের হয়, তাহলে তা আমি চুক্তি অনুযায়ী বা ভারতের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত সালিসের বোঝাপড়া অনুযায়ী তাদের তা হাতে তুলে দেবো।
৭) এই চুক্তির কোনো অংশের দ্বারাই এটি ভারতের কোনো ভবিষ্যৎ সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত হবে না বা তেমন কোনো ভবিষ্যৎ সংবিধানের ভিত্তিতে ভারত সংরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে আমার ইচ্ছা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে এই চুক্তির কোনো অংশ নাকচ বা দুর্বল করবে না।
৮) এই চুক্তির কোনো অংশের দ্বারা এই রাষ্ট্রের ওপর আমার সার্বভৌমত্বের ধারাবাহিকতা বা এই চুক্তির বলে আমার যে অধিকারগুলি রয়েছে, তা ক্ষুণ্ণ হবে না।এবং এই রাষ্ট্রের শাসক হিসেবে যে সব ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও অধিকার আমি ভোগ করি এবং এই রাষ্ট্রে বর্তমানে যে সব আইন বর্তমানে জারি রয়েছে, সেগুলো বহাল থাকবে।
৯) আমি ঘোষণা করছি, এই রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমি এই অন্তর্ভূক্তির চুক্তি কার্যকর করছি এবং এই চুক্তিতে আমার বা রাষ্ট্রের শাসক প্রসঙ্গে যা যা উল্লিখিত আছে, তা আমার উত্তরাধিকারী এবং উত্তর পুরুষদের ক্ষেত্রেও একই ভাবে উল্লিখিত রয়েছে বলে গণ্য করা হবে।
ঊনিশশো সাতচল্লিশ সালের ২৬ অক্টোবর আমি স্বাক্ষর করলাম।
হরি সিং, জম্মু ও কাশ্মীর রাষ্ট্রের মহারাজাধিরাজ
ভারতের গভর্নর জেনারেল কর্তৃক অন্তর্ভূক্তিকরণের মান্যতা
ঊনিশশো সাতচল্লিশ সালের সাতাশ অক্টোবর আমি এই অন্তর্ভূক্তিকরণের চুক্তি গ্রহণ করছি।
মাউন্টব্যাটেন অফ বার্মা
ভারতের গভর্নর জেনারেল