পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ৫ নভেম্বর দিল্লি পুলিশের ১১ ঘণ্টার বিদ্রোহের খবর নজর কেড়েছে গোটা দেশের। এই অবসরে আসুন দেখে নেওয়া যাক ১৯৪৭ সালে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর দেশের কয়েকটি পুলিশ বিদ্রোহের ইতিহাস।
উত্তর প্রদেশ পুলিশ বিদ্রোহ, ১৯৭৩
উত্তর প্রদেশের প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্টাবুলারির তিনটি ব্যাটেলিয়নের বিদ্রোহ চমকে দিয়েছিল গোটা দেশকে। বেরিলি, মিরাট ও আগ্রায় ছড়িয়ে পড়েছিল বিদ্রোহ। বিদ্রোহী পুলিশদের দাবি ছিল, উচ্চ বেতন, উন্নত কাজের পরিবেশ ও সংগঠিত হওয়ার অধিকার। লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও পুলিশ বিদ্রোহে যোগ দেয়। পরিস্থিতি সামলাতে সেনা ডাকা হয়। সেনারা পুলিশকে অস্ত্রসমর্পণের নির্দেশ দিলে, পুলিশ তা মানেনি। সেনা-পুলিশে লড়াই বাঁধে। মৃত্যু হয় ৩০ জন পুলিশ ও ১৩ সন সেনার। ২ জন সাধারণ নাগরিকেরও মৃত্যু হয়। ৬০০ পুলিশকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার জেরে কমলাপতি ত্রিপাঠির নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করে।
আরও পড়ুন: সরকারি হুমকি অগ্রাহ্য করে এগিয়ে চলেছে তেলেঙ্গনার পরিবহণ শ্রমিকদের ঐতিহাসিক ধর্মঘট
মধ্যপ্রদেশে ‘ভার্চুয়াল’ পুলিশ বিদ্রোহ, ২০১৬
মধ্যপ্রদেশের মাওবাদী অধ্যুষিত বালাঘাট জেলায় এক আরএসএস প্রচারককে অত্যাচার করার অভিযোগ ওঠে মাওবাদী দমনে নিযুক্ত বিশেষ পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে ২ জন আইপিএস অফিসারকে বরখাস্ত করা হয়। ৬ জন কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।এরপরই সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানাতে থাকেন তাঁরা।প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় গোটা পুলিশ বাহিনীতে।পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়। তারপর হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপগুলোয় বিজেপি-আরএসএস বিরোধী একটি বিদ্রূপাত্মক বার্তা ছড়াতে থাকে-‘মধ্যপ্রদেশ বিজেপি-আরএসএস সিকিওরিটি অ্যাক্ট ২০১৬’।
পটনা পুলিশ বিদ্রোহ, ২০১৮
২০১৮ সালের নভেম্বরে অভূতপূর্ব পুলিশ বিদ্রোহের সাক্ষী হয় পটনা। নতু নিযুক্ত এক মহিলা কনস্টেবলের ডেঙ্গু হয়েছিল। কিন্তু ডিএসপি মহম্মদ মশলাউদ্দিন তাঁকে ছুটি দেননি। তারপর ওই মহিলার মৃত্যু হয়। ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে পড়েন তাঁর সহকর্মীরা। পটনার লোদীপুরে নতুন পুলিশ লাইনটি তছনছ করেন তাঁরা। লক্ষ্য ছিল ডিএসপি মশলাউদ্দিন। কোনোমতে প্রাণে বাঁচেন ওই অফিসার। ঘটনার জেরে ১৭৫ জন কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়। ৩০ জনকে সাসপেন্ড করা হয়। বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবলদের মধ্যে ১৬৫ জনই ছিলেন নবনিযুক্ত। তাদের ৬০ শতাংশই মহিলা।